বাবু সুমন চন্দ্রশীল :: বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আনোয়ার উল্যার বিরুদ্ধে এক রোগীকে লাঞ্ছিত ও তার ছেলেকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার বেলা ১১টার দিকে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরেই মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে মারধরের ঘটনায় আহত হয়ে শুক্রবার সকালে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন দুলিয়া বেগম। এরপর সোমবার সকাল ১১টার দিকে হঠাৎ দুলিয়া বেগম অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রহিমা বেগম তার (দুলিয়া বেগমের) ছেলে জিলানীকে খবর দেয়। জিলানী দ্রুত হাসপাতালের এসে তার মাকে মেঝেতে অজ্ঞান অবস্থায় পরে থাকতে দেখে নার্সদের ডেকে নিয়ে আসেন। নার্সরা চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহকে ডেকে নিয়ে আসেন।
জিলানী তার মায়ের এ অবস্থার কারণ জানতে চাইলে চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহর সাথে তার বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চিকিৎসক সকলের মধ্যে জিলানীকে মারধর করেন। এ সময় জিলানীর মাকেও লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।দুলিয়া বেগমের ছেলে জিলানী বলেন, মায়ের অসুস্থতার কথা শুনামাত্রই হাসপাতালে গিয়ে দেখি ডাক্তার আমার মাকে দেখতে আসে। ডাক্তার আমাকে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বললে আমি বের হয়ে না যাওয়ায় আমাকে চর-থাপ্পর মারতে থাকে।অভিযুক্ত চিকিৎসক আনোয়ার উল্যাহ বলেন, আমি ওই ছেলের মায়ের কাছ থেকে একটি ভিডিও সাক্ষাতকার নিতে চাইলে ওই ছেলে আমার উপর আক্রমণ করে। আমি এর প্রতিবাদ করেছি মাত্র।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. হুমায়ুন শাহীন খান বলেন, হাসপাতালের এ রকমের কোন ঘটনা আমি এখন পর্যন্ত শুনিনি। তবে এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটে থাকলে দুঃখজনক, আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।সূত্র বলছে,গত (২৭ এপ্রিল) পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা শ্রমিক-ব্যাবসায়ীরা চিকিৎসা নিতে এসে দূরব্যাবহারের শিকার হওয়ার ঘটনা ঘটেেছিল,তখন অভিযোগ ছিল,পাথরঘাটা উপজের মৃত আলহাজ্ব রুহুল আমীন খানের পুত্র পাথরঘাটা বিএফডিসির মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের আল আরকে ফিসের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ নাজমুল হাসানকে চিকিৎসা না দিয়ে তাড়িয়ে দেয়া হয়।
অন্যদিকে আবারো গত (৭ই মে) মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্টে ফেল করা পাথরঘাটা সদরের বাসিন্দা সাগর(১৭) নামের এক ছাত্র ঘুমের ঔষধ খেয়ে আত্বহত্যা করার চেস্টা করলে তাকে তার পরিবার তাকে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডঃ আনোয়ার উল্যাহ সেই ছাত্রকে মাদকসেবী বলে আখ্যায়িত করে ও তাকে চর-থাপ্পর মারতে উঠে। অভিযোগ রয়েছে, বরগুনা পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রায় দের লাখ সাধারন মানুষ। রোগী আছে কিন্তু নেই কোনো ডাক্তার।
হাসপাতালে কর্মরর্ত ডাক্তাররা তাদের দায়িত্ব পালন না করে তাদের চেম্বারে ওষুধ কম্পানীর লোকেদের সাথে সময় গল্প করে সময় পার করার অভিযোগ উঠেছে। কর্মক্ষেত্রে উপস্থিত থাকার জন্য সরকারের কঠোর নির্দেশনা থাকার পরও তোয়াক্কা করছেন না এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা। এদিকে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা ভেঙ্গে পরেছে। সেবা নিতে আসা রোগীরা প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। আবার চিকিৎসা সংকটে হাসপাতালে মারা যাচ্ছে অনেক রোগী।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply